Friday, March 8, 2019

‘কী চেক করলেন, আমার কাছে তো পিস্তল আছে’



খেলনা পিস্তল দিয়ে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের পিস্তল ধরতে না পারা— এই দুটো ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে প্রথম চেকিং পার হওয়ার পর নিজের সঙ্গে অস্ত্র থাকার কথা সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তাকর্মীকে জানান যাত্রী মামুন আলী। বিমানবন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস ১৩১ ফ্লাইটে সিলেটে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে আসেন মোহাম্মদ মামুন আলী। তার সঙ্গে পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি থাকলেও বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় কোনও ঘোষণা না দিয়েই ভেতরে প্রবেশ করেন। অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের প্রথম গেটের আর্চওয়েতে তার শরীর তল্লাশি করেন আনসার সদস্য রিপন। আর্চওয়ে পার হওয়ার পরেও মামুনের সঙ্গে থাকা অস্ত্র শনাক্ত করতে পারেননি সেখানের নিরাপত্তা কর্মীরা। তখন মামুন নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে জানতে চান, ‘আপনাদের চেকিং কি শেষ হয়েছে? ওই আনসার সদস্য জবাবে হ্যাঁ বললে যাত্রী মামুন বলেন, ‘আপনি কী চেক করলেন, আমার কাছে তো পিস্তল আছে।’ এরপর তিনি পিস্তল বের করে দেখান এবং লাইসেন্সও দেখান। কিছু সময় পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শাহজালালের এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকি। সেসময় এভসেক থেকে ইউএস-বাংলাকে বলা হয়— ওই যাত্রীকে অফলোড করার জন্য। তবে এভসেক থেকে লিখিত কোনও ডকুমেন্ট না দেওয়ার মামুন আলীকে অফলোড করেনি ইউএস বাংলা। পরবর্তীতে যাত্রী মামুন পিস্তল ও গুলি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে নিয়ম মেনে সঙ্গে করে সিলেটে নিয়ে যান।

সূত্র মতে, মামুন আলী নিজেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন।তবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ভাইস চেয়ারম্যানের কোনও পদ নেই বলে জানান সংস্থাটির সচিব হিরন্ময় বাড়ৈ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ নেই। তাছাড়া, মামুন আলী নামে এখানে কেউ নেই। এটা হয়তো বেসরকারি কোনও সংস্থার হতে পারে।’

তবে যাত্রীর মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যাত্রী অস্ত্র থাকার বিষয়টি আগে ঘোষণা দেননি। তবে নিরাপত্তা কর্মীরা অস্ত্র শনাক্ত করার পর তাকে যথাযথ নিয়মে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন সময়ে অনেকেই অস্ত্র সঙ্গে থাকলেও ঘোষণা দেন না, পরবর্তীতে স্ক্যানিংয়ে তা ধরা পড়ে।’
Previous Post
Next Post

post written by:

0 comments: