রাজধানীর প্রতিটি গণপরিবহনে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ৯টি আসন সংরক্ষিত রাখা হলেও এসব আসন প্রায় সময়ই পুরুষের দখলে থাকে। সাধারণ গণপরিবহনে এ নিয়ম কিছুটা মানা হয় বটে। তবে সিটিং সার্ভিস ও দূরপাল্লার পরিবহনগুলোতে নারীদের জন্য কোনও আসন রাখা হয় না। এ নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয় নারীদের। নগরীর গণপরিবহনগুলোতে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
আইন অনুযায়ী, গণপরিবহনের বড় বাসগুলোতে ৯টি এবং ছোট বাসগুলোতে ৬টি আসন সংরক্ষিত রাখান বিধান রয়েছে। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গণপরিবহনে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিধান করা হয়। সে সময় গণপরিবহনে নারীদের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে সিদ্ধান্ত হয়, বড় বাসে ৯টি এবং মিনিবাসে ছয়টি আসন নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে।
সড়ক পরিবহন আইনেও গণপরিবহনে নারী, শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা হয়েছে। ওই আইনে সংরক্ষিত এসব আসনে অন্য কেউ বসলে তাকে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। শুধু সংরক্ষিত আসন নয়, আইনে চালকের পেছনে অর্থাৎ বাসের সামনে দিকের সারিতে সংরক্ষিত আসন রাখতে হবে। চালকের পাশের লম্বা আসন (ইঞ্জিন কাভারের পাশে) কিংবা দরজার পাশে রাখা যাবে না। আসনের ওপরে সংরক্ষিত আসন লিখে দিতে হবে। কিন্তু নগরীর অনেক গণপরিবহনে এর উল্টোচিত্র দেখা গেছে। বাসে রুট পারমিটের অন্যতম শর্ত সংরক্ষিত আসন রাখাও বাধ্যতামূলক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর কিছু গণপরিবহনে ‘নারী, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্য সংরক্ষিত আসন’ বাক্যটি লেখা থাকলেও কোনও গণপরিবহন মালিকই এই আইন মানছে না। ফাঁকা থাকলেই সেসব আসনে বসে পড়েন পুরুষরা। সংরক্ষিত আসনে বসতে অনেক সময় পুরুষদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে হয় নারীদের। এই আইন না মানার অপরাধে এখনও কারও শাস্তিও হয়নি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে রামপুরা ব্রিজে দেখা গেছে, রববর পরিবহনের একটি বাসের সামনের সারির ডানপাশে বড় করে লেখা- নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ৯টি আসন সংরক্ষিত। কিন্তু দেখা গেছে সংরক্ষিত আসনগুলোতে কয়েকজন পুরুষ যাত্রী বসে আছেন। আর তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন এক নারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসের সহকারী রশিদ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মহিলাদের আসনে পুরুষ যাত্রীদের না বসতে আমরা যাত্রীদের নিষেধ করি। কিন্তু অনেক যাত্রী তা মানে না। তখন ঝগড়া লাগে। আমাদের করার কিছু থাকে ন
দাঁড়িয়ে থাকা ওই নারীর নাম মিতু। তিনি বলেন, ‘বনশ্রীর সি ব্লক থেকে বাসে উঠেছি। কিন্তু দেখি নারীদের আসনে দুজন পুরুষ বসে আছে। আসন ছেড়ে দিতে বললে তারা বলে এটা সিটিং সার্ভিস। আসন নেই। উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে- এই বাসে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সিস্টেম নেই, নেমে যান। তখন বাধ্য হয়েই দাঁড়িয়ে এসেছি।’
0 comments: