Saturday, July 9, 2016

পিস টিভি বন্ধ করে জাকির নায়েককে গ্রেফতারের দাবি

‘ইসলাম জঙ্গীবাদ ও হত্যা সমর্থন করেনা’ জাকির নায়েকের এমন বক্তব্যের পরেও
পিস টিভি বন্ধ করে জাকির নায়েককে গ্রেফতারের দাবি ভারতের মুসলমান নেতাদের।

”গুলশান হামলায় অংশগ্রহনকারী নিহত দুই শীর্ষ জঙ্গী ভারতের ইসলামী নেতা ড. জাকির নায়েককে অনুসরন করতেন” এমন শিরোনামে বাংলাদেশের একটি শীর্ষ ইংরেজি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর নড়ে চড়ে বসেছে ভারত। গত কদিন ধরে চলে আসা নানা আলোচনার পর ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও পিস টিভির প্রতিষ্ঠাতা জাকির নায়েককে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মুসলমান নেতারা।
গত ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতদের অন্তত দুইজন জাকির নায়েকের মতাদর্শে প্রভাবিত ছিলেন বলে জানার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জাকির নায়েকের বক্তব্য খতিয়ে দেখার ঘোষণা দিয়েছে।
এরইমধ্যে মুম্বাইয়ে ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন কার্যালয়ের বাইরে পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাকির নায়েকের বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে’। খবর এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের
উত্তর প্রদেশের বেরেলি অঞ্চলের ইমাম মাওলানা শাহাবুদ্দিন রাজভি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘গুলশানে জঙ্গি হামলাকারীরা জাকির নায়েকের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। তার বক্তব্য সন্ত্রাসীদের উষকে দিচ্ছে, মুসলমানদের উগ্র হতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।’
মূলতঃ এ জন্যই জাকির নায়েকের গ্রেফতার দাবি করেন তিনি।
somoyerkonthosor-2222
সুন্নি হানাফি বারেলভি গোত্রের এ ইমাম ঈদের নামাজে দেওয়া বক্তব্যে জাকির নায়েককে ‘দ্রুত গ্রেফতার’ এবং তার পিস টিভি ‘অবিলম্বে নিষিদ্ধের’ দাবি জানান।
বেরেলি শহরের মওলানা আসজাদ রাজা খানও জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ছড়ানোর’ অভিযোগ তুলেছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যমন্ত্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু দিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাকির নায়েকের বক্তব্য খতিয়ে দেখবে। সেগুলো পর্যালোচনার পর তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গণমাধ্যমে তার বক্তব্য যেভাবে এসেছে তা খুবই আপত্তিকর।’
প্রসঙ্গত, দ্যা ডেইলি স্টারের একটি খবরে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে যে ঢাকায় গুলশানের হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত একজন, রোহান ইমতিয়াজ (আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে ) ফেসবুকে জাকির নাইককে ‘ফলো’ করত এবং তার কিছু পোস্ট সে নিজের ওয়ালে শেয়ারও করেছিল।
এই পটভূমিতে গুলশানের হামলাকারীরা তার বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়েছিল কি না সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এদিন নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত ৪ জুলাই বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ও পরবর্তিতে ৫ জুলাই ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় হামলাকারী দুই নিহত জঙ্গীর  ড. জাকির নায়েককে অনুসরনের খবর বেরুলে এ প্রসঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান ড. জাকির নায়েক ।
বর্তমানে উমরাহ করতে সৌদি আরবে রয়েছেন জাকির নায়েক। তার  বিরুদ্ধে সর্বশেষ এ অভিযোগ ওঠার পর  মক্কা নগরী থেকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি ইসলামিক স্টেটকে অনৈসলামিক বা ‘ইসলামবিরোধী’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘ইসলামের নাম ব্যবহার করে আমরা ইসলামের নিন্দা করছি… ইরাক সিরিয়ার ইসলামিক স্টেট ইসলামবিরোধী, যারা নিরপরাধ বিদেশিকে হত্যা করছে। ইসলামের দুশমনরা এ নাম (আইএস) দিয়েছে।’
উল্লেখ্য, জাকির নায়েকের বক্তব্যের কারণে তার প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষিদ্ধ হয়। এমনকি মালয়েশিয়াতেও জাকির নায়েকের বক্তব্য প্রচারের অনুমতি নেই।

Previous Post
Next Post

post written by:

0 comments: