Saturday, March 9, 2019

জড়িয়ে ধরার চাকরি, ঘণ্টা প্রতি ৫৮০০ টাকা



আপনি কি একা? সঙ্গী দূরে থাকে? মন খারাপ হলে আলিঙ্গন করার কেউ নেই? অবাক হবেন না এখন এই সেবাও চালু হয়েছে। আর অবাক করা এই সেবা কার্যক্রম প্রথমে নিউ ইয়র্ক দিয়ে শুর হলেও এখন আমেরিকা তো বটেই অস্ট্রেলিয়া-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।প্রথমে একাকী মহিলাদের জন্য চালু হলেও পরে তা পুরুষ ও মহিলা দুই ক্ষেত্রেই চালু হয়। সম্পর্কে থাকলেও যারা একা, স্বামী বা স্ত্রী কাজের জন্য বাইরে, কিংবা সম্পর্কে নেই, তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই ‘কাডলিং সার্ভিস’ শুরু।

সমাজতাত্ত্বিক, মনোবিদরা বলছেন, আলিঙ্গন মন খারাপ কিংবা একাকিত্ব দূর করার সবচেয়ে বড় ওষুধ।বছর দু’য়েক আগে এই সেবা প্রথম চালু হয় নিউ ইয়র্কে। তখন দর ছিল ঘণ্টা প্রতি ৫৮০০ টাকা। অস্ট্রেলিয়াতে এর খরচও মোটামুটি একই। এই সেবা নেওয়া গ্রাহক বছর একচল্লিশের মহিলা সাসকিয়া ফ্রেডেরিকস বলেন, মাসে মাত্র কয়েক দিন তাঁর স্বামী সঙ্গে থাকেন। একাকিত্ব বোধ করেন। তাই স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করেই এমনটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

নিউ ইয়র্কে তিনি, আর স্বামী কানেকটিকাটে দ্য ন্যাশনাল গার্ডের একজন পুলিশ অফিসার। তাই মাসে দু’বার কাডলার সার্ভিসের সাহায্য নিচ্ছেন সাসকিয়া।সাসকিয়ার স্বামী বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন কারণ সংস্থার শর্ত অনুযায়ী এতে কোনওরকম যৌনতা নেই।সাসকিয়া বলেন, আলিঙ্গনের কোনও বিকল্প নেই। মাথায় হাত রাখলে কিংবা পাশে কেউ তাঁকে জড়িয়ে ঘুমোতে গেলে তিনি নিরাপদ বোধ করেন।
কাডল সেশনের জন্যই তিনি অবসাদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন, জানান তিনি। কারণ এতে তাঁর শরীরও নাকি ‘ফিট’ থা কছে।

টাকা দিচ্ছেন বলে এতে গ্রাহকের কোনও অস্বস্তিবোধও নেই বলে জানিয়েছে সংস্থা। তাদের দাবি, আমেরিকার চাকুরিরতা মহিলাদের মধ্যে এর চল বাড়ছে।সাসকিয়া বলেন, তাঁর স্বামী আশাবাদী, তাঁর সহকর্মীরাও বিষয়টিকে খারাপ ভাবে দেখবেন না।নিউ ইয়র্কের এই সংস্থার সিইও অ্যাডাম বলেন, দু’ঘণ্টার বেশি একদিনে এই সেবা মিলবে না। সপ্তাহে তিনদিনের জন্য এটি চালু করা হচ্ছে।মহিলা ছাড়াও পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এমনকি একেবারে তরুণ প্রজন্মও এসেছে এই কাডলিং সার্ভিস নিতে। পরিণত মনের মানুষরা এই চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাই কাডলিংয়ের ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কের ইচ্ছা আসাটা স্বাভাবিক হলেও পেশাদারিত্বের কারণেই তা অন্য ভাবে দেখছেন কর্মীরা।

অ্যাডাম বলেন, একই মানসিকতার মানুষের ক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনও জরুরি, সে কথা মাথায় রেখেই এই সেবার ভাবনা। আমেরিকার অন্য শহরেও এই সেবা ছড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা ছিল সংস্থা। স্পেনের সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, বর্তমানে আমেরিকার ১৯টি শহরে রয়েছে এই সেবা। পেশাদার কাডলার ইয়ান বলেন, এই পরিষেবা মনকে ভারমুক্ত করছে। নিজেকে মানুষ হিসাবে মেলে ধরার জন্যই এই পরিষেবা নিচ্ছেন আরও অনেকেই।
Previous Post
Next Post

post written by:

0 comments: